জীবনে এমন কত বিচ্ছেদ, কত মৃত্যু আছে, ফিরিয়া লাভ কি? পৃথিবীতে কে কাহার…

র‌্যাবের ওয়েব সাইট হ্যাকারদের র‌্যাব গ্রেফতার করেছে। শনিবার রাতে মিরপুরের একটি বাসা থেকে ৪ হ্যাকারকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা মিরপুরে সাইক ইন্সটিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট টেকনোলজি কলেজের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ৪র্থ সেমিস্টারের ছাত্র। এরা হলো শাহী মির্জা (২১), সৈয়দ ইসতিয়াক (২১), জায়েদুল হোসেন (২১) ও তাওহিদুল ইসলাম(২১)। হ্যাকারদের দলনেতা শাহী মির্জা এ পর্যন্ত দেশ-বিদেশের ১৮ টি ওয়েবসাইট হ্যাকিং করেছে। র‌্যাব সূত্র জানায়, হ্যাকিংয়ের তালিকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওয়েব সাইট, সরকারের পরিকল্পনা কমিশনেরওয়েব সাইট ও অনলাইন বিডি নিউজের ওয়েব সাইট রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের রবিবার র‌্যাব সদর দফতরে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। সাংবাদিকদের কাছে হ্যাকারদের চাঞ্চল্যকর কাহিনী তুলে ধরেন র‌্যাব মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার, র‌্যাব আইটি শাখার পরিচালক কমান্ডার মইনুল ইসলাম, মিডিয়া এ্যান্ড লিগ্যাল শাখার পরিচালক কমান্ডার আবুল কালাম আজাদ, উপ-পরিচালক মেজর মাসুদ ও সহকারী পরিচালক এএসপি কামরুজ্জামান।

র‌্যাব জানায়, শাহী মির্জা মিরপুর-৬ নম্বর সেকশনে অবস্থিত বেসরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট সাইক ইন্সটিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট টেকনোলজির কম্পিউটার সায়েন্সের ৪র্থ সেমিস্টারের ছাত্র। তার বাবা মুবাশ্বের আলী পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর। তিনি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানায় কর্মরত। শাহী মির্জা তার ইন্সটিটিউটের তিন বন্ধু সৈয়দ ইসতিয়াক, জায়েদুল ও তাওহিদুল ইসলামসহ মিরপুর-১ নম্বর সেকশনের ১ নম্বর রোডের এফ ব্লকের ২৫ নম্বর বাড়ির ৬ষ্ঠ তলায় একটি মেসে ভাড়া থাকে। গত ৫ সেপ্টেম্বর র‌্যাবের ওয়েব সাইট হ্যাকড হওয়ার পর র‌্যাব ইন্টিলিজেন্স ও আইটি শাখা তদন্ত নামে। হ্যাকিংয়ের মূল পরিকল্পনাকারী শাহী মির্জা। সে তার কম্পিউটারে ব্যবহৃত ইন্টারনেটের আইপি নম্বর (ইন্টারনেট প্রটোকল) ব্যবহার করে র‌্যাবের ওয়েব সাইট হ্যাকিং করে।

সূত্র জানায়, র‌্যাব তদন্ত করে দেখতে পায়, লিনাক্স নামে একটি ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের লাইন থেকে এই হ্যাকিং করা হয়েছে। পরে ইন্টারনেটের আইপি নম্বর সংগ্রহ করে র‌্যাব তদন্তে করে শনিবার রাতে মিরপুর থেকে ঐ ৪ হ্যাকারকে গ্রেফতার করে। তাদের মেস থেকে ২ টি কম্পিউটার ও ৭২ টি সিডি জব্দ করে।

র‌্যাব মহাপরিচালক জানান, হ্যাকিং কোন নতুন টেকনোলজি নয়। কম্পিউটার প্রোগ্রাম সম্পর্কে ধারণা থাকলে যে কেউ হ্যাকিং করতে পারে। বর্তমানে যেসব ছাত্র-ছাত্রী কম্পিউটার বিষয়ে পড়াশুনা করছে তাদের অনেকেই হ্যাকিং করা কৃতিত্ব মনে করেন। কিন্তু হ্যাকিং করা একটি অপরাধ।

সূত্র জানায়, শাহী মির্জা জানায়, সে ইচ্ছা করেই হ্যাকিং করেছে। এর আগে দেশে ও বিদেশের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইট সে হ্যাকিং করেছে। প্রতিটি হ্যাকিং করার ক্ষেত্রে সে নিজের ইন্টারনেট লাইন ব্যবহার করেছে। হ্যাকিংয়ে সে নিজের পরিচয় গোপন করেনি। র‌্যাবের ওয়েব সাইট হ্যাকিং করে তাতে সে জানিয়ে দিয়েছে যে র‌্যাবের আইটি শাখা তেমন শক্তিশালী নয়। আইটি বিষয়ে র‌্যাবের চেয়ে তার ১০ গুণ বেশি জ্ঞান রয়েছে। সে আরো জানায়, দুই মাস আগে সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওয়েব সাইট হ্যাকড করেছে। এছাড়া বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির, অনলাইন বিডি নিউজসহ দেশে-বিদেশের আরো কয়েকটি ওয়েব সাইট হ্যাকিং করেছে।

র‌্যাব আইটি শাখার পরিচালক কমান্ডার মইনুল ইসলাম জানান, ওয়েব সাইট হ্যাকিং করলে বাংলাদেশ আইসিটি(তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি) আইন-২০০৬-এর ৫৪ ও ৫৫ ধারায় সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছরের জেল ও ১ কোটি টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। তাই কেউ যেন কৃতিত্বপূর্ণ কাজ মনে করে ওয়েব সাইট হ্যাকিং না করে।

এ ব্যাপারে র‌্যাবের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃতদের সংশোধন করার চেষ্টা করা হবে। কারণ এরা তথ্য প্রযুক্তিতে যথেষ্ট জ্ঞান রাখে। তিনি জানান, সচেতনতার অভাবেই এরা নিজেদের মেধার অপপ্রয়োগ করেছে।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান