জীবনে এমন কত বিচ্ছেদ, কত মৃত্যু আছে, ফিরিয়া লাভ কি? পৃথিবীতে কে কাহার…

Archive for the ‘স্বাস্থ্য’ Category

মস্তিষ্কে যে আট ধরনের প্রভাব সৃষ্টি করে যৌনতা

মস্তিষ্কে নানা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে যৌনতা। রুটজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী ব্যারি আর কোমিসারুক এ বিষয়ে গবেষণা করেন। যৌনতার সঙ্গে মস্তিষ্কে যা ঘটে যায় তা জানিয়েছেন তিনি। দেখে নিন, কিভাবে সেক্স মস্তিষ্কে আটভাবে প্রভাববিস্তার করে।
১. যৌনতা মাদকের মতো : সেক্স মস্তিষ্কে ভালো অনুভূতি দেয়। একজন সঙ্গী বা সঙ্গিনীর খোঁজ করতে উৎসাহিত করে। যৌনকর্মে প্রচুর ডোপামেন নিঃসৃত হয় যা মস্তিষ্কে সুখানুভূতি সৃষ্টি করে। এই উপাদানটি নেশাসৃষ্টিকারী বহু মাদকে পাওয়া যায়।
২. বিষণ্নতা বিনাশী : ২০০২ সালে আলবানি ইউনিভার্সিটির গবেষকরা ৩০০ জন নারীর ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখেন, যারা কনডম ছাড়া সেক্স করেছেন তারা অন্যদের চেয়ে কম বিষণ্নতায় ভুগছেন। বীর্যের বিভিন্ন উপাদান নারীদেহ শুষে নেয়। এগুলো বিষণ্নতা দূর করতে সহায়তা করে। এসব উপাদান মানুষকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সম্পর্কে গড়তেও সহায়তা করে।
৩. মন খারাপও করে দেয় সেক্স : একই সঙ্গে সেক্স করার পর অনেকেরই মনটা খারাপ হয়ে যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘পোস্টকোয়টাল ডাইফোরিয়া’। নারীদের ওপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, তাদের এক-তৃতীয়াংশ মন খারাপ সমস্যায় ভুগছেন। এর কারণ এখনো স্পষ্ট নয় বিজ্ঞানীদের কাছে।
৪. ব্যথা দূর করে : মাথাব্যথার কারণে যৌনতা এড়িয়ে যাবেন না। ২০১৩ সালে জার্মানির এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাথাব্যথা অবস্থায় সেক্স করার পর অংশগ্রহণকারীদের সাধারণ ব্যথাসহ মাইগ্রেনের ব্যথা ৩০ শতাংশ কমে গেছে।
৫. স্মৃতিশক্তি পরিষ্কার করে : প্রতিবছর প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে সাতজন অ্যামনেশিয়ায় আক্রান্ত হন। মানসিক পীড়ার কারণে স্ট্রেস দেখা দেয়। এ অবস্থায় মানুষের স্মৃতিশক্তি কাজ করে না। কিন্তু এ অবস্থা থেকে মুক্তি মেলে সেক্স। মাথা পরিষ্কার হয়ে যাবে এবং স্মৃতিশক্তি ফিরে আসবে।
৬. স্মৃতিশক্তি বাড়ায় : ২০১০ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, প্রতি ১৪ দিনে এক বার সেক্স করার কারণে মানুষের স্মৃতিশক্তি বেড়ে গেছে। যৌনতা মস্তিষ্কের বিশের এক অংশের নিউরনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে যা স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
৭. উত্তেজনা প্রশমন করে : যেহেতু যৌনতা মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত, তাই এর কারণে মানসিক চাপ দূর হয়। যারা সেক্স করেন, তারা স্ট্রেস পূর্ণ পরিবেশে দারুণভাবে নিজেকে এগিয়ে নিতে পারেন।
৮. ঘুম আনে : সেক্স আপনাকে শান্তির ঘুম দেবে। মস্তিষ্কের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স নামক অংশের উত্তেজনা প্রশমিত হয় যৌনতার পর। এতে অক্সিটোসিন এবং সেরোটনিন হরমোন নিঃসৃত হয়। এগুলো মানুষকে ঘুমাতে সহায়তা করে।

৩০ মিনিটের বেশি দীর্ঘ মিটিং নয়!

অফিসিয়াল বা ব্যবসায়ীক কাজে মিটিংয়ে বসে নানা আলোচনা করতে গিয়ে অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেন। যদিও দীর্ঘ মিটিংয়ের এ প্রবণতা মোটেই ভালো ফল আনে না। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে বিজনেস ইনসাইডার।
সপ্তাহের ব্যস্ত দিনগুলোতে অফিসের কাজের প্রয়োজনে মিটিংয়ে অনেককেই বসতে হয়। যদিও এর দৈর্ঘ্য বেশি হলে তা উপস্থিত ব্যক্তিদের মনে বিরক্তি আনে। এতে অনেক সময় মিটিংয়ের প্রতি মনোযোগও নষ্ট হয়।
এ প্রসঙ্গে একজন মার্কিন উদ্যোক্তা, লেখক ও ব্লগার ব্র্যাড ফেলড বলেন, ‘আমাকে অনেকেই এক ঘণ্টার মিটিংয়ের জন্য আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু আমি মিটিং করলে তা আধ ঘণ্টার মধ্যেই শেষ করার জন্য প্রস্তুতি নেই। তবে এর কোনো কোনোটি আধ ঘণ্টাতেই শেষ হয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি যদি এক ঘণ্টার জন্য মিটিং করেন তাহলে প্রয়োজন না হলেও তাতে বাড়তি সময় লাগে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, তিনি ৬০ মিনিট, ১৫ মিনিট, ৫ মিনিট, ৪৫ মিনিট, ৩৭ মিনিট ইত্যাদি বহু সময়ব্যাপী মিটিংয়ের পরিকল্পনা করেছেন। কিন্তু এগুলোর মধ্যে ৩০ মিনিটটিই সবচেয়ে কার্যকর হয়েছে। ১৫ মিনিটের মিটিংয়ে অনেক আলোচ্য বিষয় থাকলে তা সমস্যা সৃষ্টি করে। একইভাবে আধ ঘণ্টার চেয়ে বড় মিটিংয়ে বিরক্তি সৃষ্টি হয়। তাই তিনি আধ ঘণ্টার মিটিংকেই সবচেয়ে কার্যকর বলে মনে করেন।

‘সেলফি’ জোয়ার : মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করছে

হালের সেলফি জোয়ারে কম ওজনের, হালকা-পাতলা দেহ অনেকেরই প্রিয় থেকে প্রিয়তর হয়ে উঠছে। আর এ জোয়ারে গা ভাসিয়ে দিয়ে ওজন কমাতে গিয়ে অনেকেই মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হাফিংটন পোস্ট।
‘সেলফি ডকুমেন্টেশন’ এক্ষেত্রে একটি বড় বিষয়। অনেকেই নিজের ওজন কমানোর জন্য খাবার কমিয়ে দিয়েছেন। এরপর নিজের দেহের পরিবর্তন সেলফির মাধ্যমে অনলাইনে তুলে রাখছেন। এ প্রবণতার কারণে খাবার কম গ্রহণ করার প্রবণতা তৈরি হচ্ছে। এ প্রবণতায় অসুস্থতার ঝুঁকি অনেক বেড়ে গেছে।
বিষয়টিকে ‘ইটিং ডিজঅর্ডার’ হিসেবেই দেখছেন অনেক চিকিৎসক। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্যের ড. অ্যালেক্স ইয়েলোলেস বলেন, ‘কিছু মানুষ তাদের অসুস্থতার বিভিন্ন পর্যায়কে ছবিতে তুলে রাখছেন এবং তা বিভিন্ন মানুষের কাছে পাঠাচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা তাদের অসুস্থতার রেকর্ড সংরক্ষণ করছেন এবং তার বিভিন্ন পর্যায় অন্যদের পাঠাচ্ছেন। এতে তারা একটি অসুস্থতার দিকে ধাবিত হচ্ছেন এবং অন্যদেরও এতে উদ্বুদ্ধ করছেন।’

যে কারণে ঘুম পেলে চোখের পর্দা ভারি হয়ে আসে

অনেকেরই ঘুম পেলে চোখের পর্দা ভারি অনুভূত হয়। এতে চোখ খোলা রাখাই যেন দায় হয়ে যায়। এর কারণ জানিয়েছেন, বিশিষ্ট লেখিকা, কলামিস্ট ও লেকচারার মেরিলিন ভস স্যাভান্ট। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে প্যারেড ডট কম।
চোখের ওপরের দিকের পাতাগুলো খোলা রাখার কাজটি করে ‘লেভ্যাটর’ মাংসপেশি। দিনের পরিশ্রমের পর দেহের সব মাংসপেশিই ক্লান্ত হয়ে যায়। আর তখন দেহের অন্য মাংসপেশির মতো লেভ্যাটরও ক্লান্ত হয়ে যায়।
তবে আপনার বাহু ও পায়ের মতো লেভ্যাটরকে কিছু সময় ব্যস্ত থাকলে চলে না। এ পেশিগুলোকে জেগে থাকলে সব সময়েই ব্যস্ত থাকতে হয়।
এ কারণে দিন শেষে সবচেয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে এ লেভ্যাটর পেশিগুলো। আপনার চোখের ওপরে যদি অতিরিক্ত চামড়া থাকে তাহলে এ প্রভাব বেশি পড়ে। এতে ক্লান্ত হলে চোখের পাতা অনেক বেশি ভারি বলে মনে হয়।

পর্দায় কমে ঘুম!

গরাদে বা জানালায় ঝুলানো পর্দার কথা বলা হচ্ছে না, বলা হচ্ছে টিভি মনিটর, কম্পিউটার কিংবা মোবাইলের স্ক্রিন বা পর্দার কথা। এত দিন ধরে মা-বাবারা সন্দেহ করেছেন, কিন্তু এবার অকাট্য প্রমাণ পেয়েছেন ডাক্তাররা। তাঁদের ভাষ্য, কিশোর বয়সীরা যত বেশি সময় টিভি, মোবাইল বা কম্পিউটারের পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকবে, ততই তার ঘুমের পরিমাণ কমতে থাকবে!
ইলেকট্রনিকস পণ্যের পর্দার এ ‘প্রমাণসাপেক্ষ’ ভয়াবহতা উন্মোচন করেছেন নরওয়ের বারগেন শহরে অবস্থিত রিজিওনাল সেন্টার ফর চাইল্ড হেলথের গবেষকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, ঘুম কমের এ মাত্রা আরো ভয়াবহ হবে যদি ঘুমানোর আগমুহূর্তেও ১৩ থেকে ১৯ বছরের ছেলেমেয়েরা মেতে থাকে ওই সব অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক পণ্য নিয়ে।
নরওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের হোর্দাল্যান্ড কাউন্টির ১৬ থেকে ১৯ বছর বয়সী প্রায় ১০ হাজার ছেলেমেয়ের ওপর দুই বছর ধরে পরিচালিত এক গবেষণা শেষে গবেষকরা এ তথ্য উন্মোচন করেন। গবেষণার জন্য কিশোর বয়সী এ ছেলেমেয়েদের কাছে তাদের ঘুমের ধরন ও মাত্রা, স্কুলের সময় বাদে কত সময় তারা টিভি-কম্পিউটার-মোবাইলে কাজ করে, এর হিসাব এবং কী ধরনের ইলেকট্রনিক পণ্যে তাদের আসক্তি, তা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। দেখা গেছে, যারা দিনে চার ঘণ্টার বেশি টিভি-কম্পিউটার অথবা মোবাইলের পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকে, তাদের তিন-চতুর্থাংশই অন্যদের তুলনায় কম ঘুমায়। তাদের গড় ঘুমের পরিমাণ পাঁচ ঘণ্টারও কম। কম ঘুমানোর কারণে তাদের শারীরিক সুস্থতা এবং রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও অন্যদের থেকে অনেক কম।
গবেষকরা এ জন্য এখন থেকেই ইলেকট্রনিক পণ্যের গায়ে ধূমপান সামগ্রীর মতো ‘সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি’ হিসেবে পর্দার এ ক্ষতিকর প্রভাব উল্লেখ করার দাবি তুলেছেন। সূত্র : এএফপি।

হৃদরোগ সাড়ান বিয়ে করে!

হৃদরোগের নানা সমস্যা কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বিবাহিত নারী-পুরুষেরা অবিবাহিতদের তুলনায় দ্রুত সেরে ওঠেন। হৃৎপিণ্ডে অস্ত্রোপচারের মতো গুরুতর পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিচালিত এক জরিপের ভিত্তিতে এ কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।
হৃৎপিণ্ডে অস্ত্রোপচারের পর সেরে ওঠার ক্ষেত্রে প্রথম তিন মাসের ধাক্কা সামাল দেওয়া যেকোনো প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের জন্যই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, দাম্পত্যজীবনে নেই এমন নারী-পুরুষদের তুলনায় গুরুতর এই সময়টা দ্রুত এবং ভালোভাবে পার করার ক্ষেত্রে দাম্পত্যজীবনে রয়েছেন এমনদের সম্ভাবনা প্রায় তিন গুণ বেশি।
এ বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদনটি জার্নাল অব হেলথ অ্যান্ড সোশ্যাল বিহেভিয়রে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনটির প্রধান রচয়িতা সমাজবিজ্ঞানী এলেন ইডলার বলেন, ‘অস্ত্রোপচারের পর সেরে ওঠার জটিল সময়টায় টিকে থাকার ক্ষেত্রে দাম্পত্যজীবনে না থাকা নারী-পুরুষেরা নাটকীয়ভাবে পিছিয়ে রয়েছেন।’
আটলান্টার এমোরি ইউনিভার্সিটির গবেষক এবং আমেরিকান সোসিওলজিকাল অ্যাসোসিয়েশনের এই সমাজবিজ্ঞানী আরও বলেন, ‘আমরা দেখতে পেয়েছি, পুরুষ হোক আর নারীই হোক, দাম্পত্যজীবনে থাকলে সেরে ওঠার, টিকে থাকার সম্ভাবনাটা বেড়ে যায়।’
দাম্পত্যজীবনে থাকা মানুষেরা একা থাকা মানুষদের তুলনায় দীর্ঘজীবী হয়—এমন ধারণা বহু আগে থেকেই সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। উনিশ শতকের ফ্রান্সে এ নিয়ে বিস্তর লেখালেখির প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু সমাজবিজ্ঞানী এলেন ইডলার চেয়েছেন এ সময়ের বাস্তবতায় একটা গুরুতর স্বাস্থ্য-সমস্যায় এর প্রভাব খুঁজে বের করতে।
হূিপণ্ডে বাইপাস সার্জারি হয়েছে এমন ৫০০ নারী-পুরুষের সাক্ষাত্কারের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল থেকে নেওয়া জাতীয় মৃত্যুহার-বিষয়ক তথ্য-উপাত্ত গ্রহণ করা হয়েছে এই গবেষণায়।
সমাজবিজ্ঞানী ইডলার বলেন, ‘অস্ত্রোপচারের পর ব্যথা আর যন্ত্রণা সামাল দিতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে দাম্পত্যজীবনে থাকা নারী-পুরুষেরা অনেক বেশি ইতিবাচক থাকেন এবং হ্যাঁ-সূচক উত্তর দেন।’

লেবুকে বলা হয় ‘সুপার ফুড’

লেবুকে বলা হয় ‘সুপার ফুড’। ভিটামিন সি, এ, বি১, বি৬, ম্যাগনেসিয়াম, বায়োফ্লাভোনয়েড, প্যাকটিন, ফলিক এসিড, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও পটাসিয়াম— কী নেই লেবুতে! পাকস্থলী, হৃদপিণ্ডের বিভিন্ন রোগসহ ইনফ্লুয়েঞ্জা, ল্যারিঙ্গিটিস, ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ ও হাইপারটেশনে ভাল উপকার দেয় লেবু। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, লেবুর রস ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
বিভিন্ন ধরনের খাবারে লেবুর ব্যবহার হয়। তবে ভাল উপকার পাওয়া যায় লেবুর শরবতে। এ শরবত বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয়। এর জন্য বেশি আয়োজনের দরকার হয় না। হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে নিলেই হয়। লেবুর শরবত প্রতিদিন সকালে পান করলে অশেষ উপকার পাবেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক সকাল বেলার এ পানীয়ের কিছু উপকারিতা-
– লেবু ‘ভিটামিন সি’ এর ভাল উৎস। এ ছাড়া নানাবিধ পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি মোকাবেলা করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ভাল রাখে।
– এতে থাকা প্যাকটিন ফাইবার মলাশয়কে সুরক্ষিত রাখে। এ ছাড়া শক্তিশালী এন্টিব্যাকটেরিয়া হিসেবেও কাজ করে।
– শরীরের পিএইচ মাত্রা ভারসাম্যপূর্ণ রাখে।
– সকাল বেলায় গরম লেবুর রস শরীর থেকে টক্সিন দূর করে।
– হজমে সাহায্য করে ও পিত্তরসের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে।
– সিটরিক এসিড, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফরফরাস ও ম্যাঙ্গানিজের ভাল উৎস লেবুর রস।
– প্যাথজেনিক ব্যাকটিরিয়ার বৃদ্ধি ও কার্যকারিতা প্রতিরোধ করে। এ ব্যাকটিরিয়া ইনফেকশন ও নানাবিদ রোগের কারণ।
– শরীরের বিভিন্ন অংশের সন্ধিতে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে।
– ঠাণ্ডায় লেবুর রস খুবই উপকারী।
– লিভার এ্যানজাইমের মাধ্যমে লিভারকে শক্তিশালী করে।
– হৃদপিণ্ডের জ্বালাপোড়ায় ক্যালসিয়াম ও অক্সিজেনের ভারসাম্য রক্ষা করে। এ সময় এক গ্লাস লেবুর রস আপনাকে আরাম দিতে পারে।
– লেবুর রস ত্বক ভাল রাখে। বলিরেখা ও ব্রণ প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী।
– দৃষ্টিশক্তির জন্য ভাল। চোখের সমস্যার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
– পরিপাক রস উৎপাদনে সাহায্য করে।
– দীর্ঘ পরিশ্রমের পর শরীরে লবণে ভারসাম্য আনতে সাহায্য করে।
সবগুলো গুণাগুণ পেতে সকাল শুরু করুন এক গ্লাস গরম লেবুর শরবত দিয়ে। এর নিরাময়ী গুণ স্বাস্থ্যে ভাল প্রভাব ফেলে। তবে মনে রাখতে হবে, দাঁতের সংস্পর্শে যেন সরাসরি লেবুর রস না আসে। যা এনামেল ধ্বংস করে দিতে পারে। তাই শরবত পানের পর ভাল করে কুলি করে নিন।

অতিরিক্ত পরিমাত্রায় দুধ স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর!

আমরা সকলেই জানি যে দুধ আমাদের শরীরের পক্ষে বেশ ভাল৷ এতে আছে ভরপুর ক্যালসিয়াম এবং আরও অনেক পুষ্টিকর উপাদান৷ ডাক্তাররা সবসময় পরামর্শ দেন যে বাড়ন্ত বাচ্চাদের দুধ খাওয়ানো উচিত৷ এবং নিজেদের শরীরের সক্ষমতা এবং শক্তি বাড়াতে আমরা অনেকেই খাবারের তালিকায় দুধ যোগ করি৷
কিন্তু সম্প্রতি একটি গবেষণায় দুধের সম্পর্কে এক অজানা তথ্য উঠে এসেছে৷ যা ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে৷ এই গবেষণাটিতে বলা হয়েছে যে, অতিরিক্ত পরিমাত্রায় দুধ খাওয়াটা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর স্বরূপ হতে পারে৷ সুইডিশ গবেষকরা বলছেন যে দিনে দুই থেকে তিন গ্লাসের বেশি দুধ খাওয়াটা আমাদের অকাল মৃত্যুরও কারণ হতে পারে!
এই গবেষণার গবেষকরা জানাচ্ছেন যে, দুধের এইরকম অদ্ভুত প্রভাবের কারণ হল অতিরিক্ত দুধ খেলে আমাদের শরীরে খুব বেশি পরিমাণ ল্যাকটোজ এবং গ্যালাকটোজ জমে যায়৷ আর এই উপাদানগুলোর জন্যই আমাদের শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং ক্রনিক ইনফ্ল্যামেশন খুব বাড়িয়ে তোলে যা আমাদের হঠাৎ মৃত্যু বা অকাল মৃত্যুর কারণ হয়ে থাকে৷
তবে দুধ দিয়ে তৈরি চিজ, ইয়োগহার্ট আমাদের শরীরে হাড়ের সাস্হ্যের পক্ষে ভাল বলে প্রমানিত হয়েছে৷ এর কারণ হল এই খাবারগুলোতে বা দুধের দ্বারা তৈরি খাবারগুলোয় ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকলেও ল্যাকটোজ এবং গ্যালাকটোজের পরিমাণ অনেকটাই কম থাকে৷ তাই তাঁরা সবাইকে একটাই পরামর্শ দিচ্ছেন যে দুধ খেলেও তা পরিমিত খান বেশি বা রোজ রোজ একদম নয়৷

ভুট্টার অজানা কিছু পুষ্টিগুণ

ভুট্টা, অতি সাধারণ একটি খাবারের নাম। সহজে চাষযোগ্য হওয়ায় বাংলাদেশে এর ফলন উল্লেখ করার মতো। ভুট্টার দাম হাতের নাগালে থাকায় এর বহুবিধ ব্যবহার চোখে পড়ে। শীতের এই সময়টাই বেবিকর্ণ বা ছোট ভুট্টা তরকারি, পরিপক্ক কাঁচা ভুট্টা পুড়িয়ে খাওয়াসহ ভুট্টার আটা নানা সুস্বাদু রান্নায় ব্যবহার হয়।
ভুট্টার আটার রুটি খাওয়ার প্রচলন আছে অনেক জায়গায়। উচ্চ মাত্রায় পুষ্টি সমৃদ্ধ এ খাবারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি জানি। তবু আজ জেনে নেব চেনা ভুট্টার অজানা কিছু পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।
* ভুট্টা উচ্চ শর্করা সমৃদ্ধ। অনেকেই তাদের দেহের শক্তি বৃদ্ধির জন্য ভুট্টাকে বেশি প্রাধান্য দেন। সকালের নাস্তায় ভুট্টাজাত খাবার খেলে সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টির যোগান নিশ্চিত হয়।
* ভুট্টাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ খনিজ ও ভিটানের উৎস হিসেবেও ধরা হয়। এতে আছে উচ্চমাত্রার আয়রণ ও ম্যাঙ্গানিজ। আপনার দেহে অনাকাঙ্ক্ষিত জীবানু প্রবেশে বাধা দিয়ে শরীরকে রাখবে সুস্থ-সবল।
* ভুট্টার তেলে প্রচুর পরিমানে এ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। পশু চর্বির মতো কোনো প্রকার ক্ষতিকারক দিক এই তেলে নেই। দেহের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ভুট্টার তেলের তুলনা হয় না।
* এককাপ রান্না করা ভুট্টায় পাবেন ১৭৮ কিলো ক্যালোরি শক্তি। দিনভর সবল থাকতে প্রতিদিন সকালে খেতে পারেন ভুট্টা জাত খাবার। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ভুট্টার তৈরি খাবার খান তাদের শরীরে অতি উচ্চ মাত্রার ক্যালরি জমা থাকে। উদাহরণ হিসেবে আফ্রিকানদের কথা বলা যেতে পারে। তাদের প্রাধান খাদ্য ভুট্টাজাত বলেই এটি সম্ভব হয়েছে বলে গবেষকদের ধারণা।
* ভুট্টা পটাশিয়ামের একটি আদর্শ উৎস, অন্যদিকে উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধিকারী সোডিয়ামের পরিমাণ আছে খুবই কম পরিমাণ।
* ভুট্টায় পাবেন পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন ‘কে’। আমাদের দেশের বয়স্ক নারীদের কোমরের হাড় ক্ষয়ে যাওয় অতি সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাড় ক্ষয়ে যাওয়া বা ভেঙে যাওয়া প্রতিরোধে দারুন কার্যকর ভিটামিন ‘কে’। তাই নিজেদের সুস্থ রাখতে প্রত্যেক নারীই ভুট্টাজাত খাবার খেতে পারেন।
* ভুট্টায় ভিটামিন বি১২ রয়েছে যা নতুন রক্তকোষ তৈরিতে সাহায্য করে। এতে রক্তস্বল্পতা দূর হয়।
* ভুট্টার ভিটামিন ‘এ’ চুলের হারিয়ে যাওয়া কোমলতা ফিরিয়ে এনে চুলকে আরও উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর করে তোলে। এছাড়া দৃষ্টিশক্তি প্রখর করতেও সাহায্য করে।
* ভিটামিন এ, সি ও লাইকোপিন ত্বককে উজ্জ্বল করে ও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূরে রাখে।
* ভুট্টা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

‘ওয়েমেন অন টপ’ পজিশনটি রতিক্রিয়ার সময় সবচেয়ে বিপজ্জনক!

কানাডার একদল বৈজ্ঞানিক বলছেন, ‘ওয়েমেন অন টপ’ পজিশনটি রতিক্রিয়ার সময় সবচেয়ে বিপজ্জনক। বিজ্ঞানীদের দাবি, পুরুষদের জন্য এই বিশেষ ধরনের শৃঙ্গারটি বিপজ্জনক। পরিসংখ্যান দেখিয়ে গবেষকরা বলছেন, এই পজিশনেই বেডরুমে পুরুষাঙ্গের উপর আঘাতজনিত সমস্যার ঘটনা সবচেয়ে বেশিবার ঘটেছে।
টেলিগ্রাফকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এক গবেষক বলেন, পুরুষাঙ্গে আঘাতজনিত ঘটনা সবথেকে বেশি ঘটে ‘ওয়েমেন অন টপ’ পজিশনের সময়। এক্ষেত্রে সঙ্গিনী পুরুষের উপরের দিকে থাকেন। নিজেদের বক্তব্যের সমর্থনে ব্রাজিলের একটি শহরে প্রায় ৩০ লক্ষ বাসিন্দাদের উপর সমীক্ষা চালিয়েছেন গবেষকরা। 
দেখা গিয়েছে, সর্বোচ্চ ১৩ বছর পরেও একজন পুরুষ নিজের পুরুষাঙ্গে ‘ফ্র্যাকচার’ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যাদের মধ্যে অর্ধেকের বয়স ৩৪ বছরে নিচে।

১০ কোটি জীবাণু ১০ মিনিটে সরায় চুইংগাম!

মাত্র ১০ মিনিট চুইংগাম চিবানো হলে মুখের প্রায় ১০ কোটি জীবাণু সরে যায় বলে দাবি করেছেন নেদারল্যান্ডসের একদল গবেষক। প্লস ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নতুন এই গবেষণার কথা বলা হয়েছে।
নেদারল্যান্ডসের গ্রোনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, ওরাল ক্যাভিটি রোধে চমৎকার কাজ করে চুইংগাম।
এই গবেষণায় অংশ নেওয়া বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ৫ জন ছাত্রকে ৩০ সেকেন্ড থেকে ১০ মিনিট পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে চুইংগাম চিবানোর পর পরীক্ষার জন্য তাদের মুখের থুতু কাপে নেওয়া হয়।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, চিবানো প্রতিটি চুইংগামের সাহায্যে মুখের ভেতরের প্রায় ১০ কোটি জীবাণু বেরিয়ে এসেছে। যত বেশি সময় ধরে চিবানো হয়, তত বেশি জীবাণু দূর করে চুইংগাম।
গবেষকরা বলছেন, ৩০ সেকেন্ড চিবানোর পর যেকোনো চুয়াংগামের আঠালোভাব কমতে থাকে। এর মানে ইতোমধ্যে এতে কিছু জীবাণু আটকে গেছে।
তারা বলেছেন, চিবানোর পর ফেলে দেওয়া চুইংগাম ইলেক্ট্রন অণুবীক্ষণযন্ত্রে স্ক্যানিংযের পর এতে লেগে থাকা জীবাণুর প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এর আগে অপর এক গবেষণায় দেখানো হয়, টুথপেস্ট না লাগিয়ে একেবারে নতুন টুথব্রাশ দিয়ে ব্রাশ করা হলে প্রায় ১০ কোটি জীবাণু চলে যায়।

পেটের মেদ না কমার কারণ

ব্যায়াম করছেন, খাচ্ছেন রয়েসয়ে তারপরও কমছে না চর্বি? কারণ থাকতে পারে অনেক। স্থাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, পেটের মেদ যা প্রকৃতি অর্থে অন্ত্রে জমে থাকা চর্বি বোঝায়। এর থেকে হৃদরোগ, টাইপ টু ডায়াবেটিস, ইন্সুলিন বৃদ্ধি ছাড়াও কোনও কোনও সময় ক্যান্সারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
যদি খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন আর ব্যায়াম করেনও স্ফিত পেট না কমে তবে হয়ত নিচের কারণগুলো আপনার ক্ষেত্রে খাটতেও পারে।
আপনি বৃদ্ধ হচ্ছেন
বয়স বাড়ার সঙ্গে ওজন কম বা বেশি হওয়ার সম্পর্ক আছে। এই সময়ে নারী এবং পুরুষের হজম শক্তি কমে। অথবা যে পরিমাণ ক্যালরি সাধারণত খরচ হওয়ার দরকার তা হয় না। তাছাড়া নারীদের ক্ষেত্রে অন্যতম সমস্যা তৈরি হয় মেনোপজের সময়।
যুক্তরাষ্ট্রের মায়ো ক্লিনিকের এনডোক্রিনলোজি বিভাগের অধ্যাপক মাইকেল জেনসেন বলেন, “যদি মেনোজপজের পর কোনো মহিলার ওজন বৃদ্ধি পায়, তবে এর অন্যতম কারণ হচ্ছে পেটের মেদ।”
মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের উৎপাদন কমে যেতে থাকে। তাছাড়া টেসটোসটেরনের মাত্রাও ধীরে ধীরে কমতে থাকে। হরমোনের এই পরিবর্তণের কারণে নারীদের পেটে মেদ জমতে থাকে।
তাই এই সময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার দরকার হয়।
ভুল ব্যায়াম
প্রতিদিন দৌড়ানো বা লাফানো হৃদপিণ্ডের জন্য ভালো। তবে হৃদপিণ্ডের জন্য ভালো ব্যায়াম, কোমরের ক্ষেত্রে কাজ করে না।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের এনডোক্রিনলোজি বিভাগের অধ্যাপক সঙ্গীতা কাশ্যাপ বলেন, “ওজন কমানো এবং কার্ডিওভাস্কুলার ব্যায়ামের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে।”
তিনি আরও জানান, শক্তি খরচ করে ব্যায়াম করলে পেশি গঠন ভালো হয়।
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের পুষ্টিবিদ কেইট প্যাটন জানান, চর্বির চাইতে ক্যালরি বেশি পুড়িয়ে পেশি গঠিত হয়। এই কারণে পেশি গঠনের ব্যায়াম বেশি করলে স্বাভাবিকভাবেই বেশি ক্যালরি খরচ হয়।
হালকা হলে সপ্তাহে ২৫০ মিনিট আর কঠিন হলে সপ্তাহে ১২৫ মিনিট ব্যায়াম করার পরামর্শ দেন প্যাটন।
প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খাওয়া
“সাদা আটা, চিপস, বিস্কুটের পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত চিনি, মিষ্টি পানীয় ও মিষ্টান্ন শরীরে প্রদাহ বাড়ায়” বলেন প্যাটন।
তিনি আরও বলেন, “আর প্রদাহের সঙ্গে পেটের মেদের সম্পর্ক রয়েছে। যত বেশি প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া হবে ততই পেটের চর্বি কমার ক্ষমতা হ্রাস পাবে।”
প্রাকৃতিক খাবার যেমন: ফল, সবজি এবং শষ্যজাতীয় খাবারে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। যা শরীরে প্রদাহ কমিয়ে পেটের মেদ জমতে দেয়না।
ভুল ‘ফ্যাট’ গ্রহণ
শরীরে সব চর্বির প্রভাব একরকম নয়। প্যাটন জানান, গবেষণায় দেখা গেছে ‘স্যাচারেইটেড ফ্যাট’ (মাংস এবং দুগ্ধজাতীয় খাবারে থাকে) অন্ত্রের চর্বি তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
অন্যদিকে ‘মোনোআনস্যাচারেইটেড ফ্যাট’ (অলিভ অয়েল এবং আভোকাডো’তে পাওয়া যায়) এবং নির্দিষ্ট ঘরানার ‘পলিআনস্যাচারেইটেড ফ্যাট’ (বিশেষ করে ওমেগা থ্রিএস পাওয়া যায় আখরোট, সানফ্লাওয়ারের দানা এবং চর্বিযুক্ত মাছে)— এগুলো শরীরের প্রদাহের বিপরীতে প্রভাব ফেলে।
আর সঠিক প্রোটিন গ্রহণ করলে শরীরও ভালো হয়।
তবে প্যাটন সাবধান করে দিয়ে জানান, যে কোনো প্রকার চর্বি শরীরে বেশি গেলে সেখান থেকে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বা চর্বিও অতিরিক্ত খাবেন না।
ঠিকমতো ব্যায়াম না করা
মেডিসিন অ্যান্ড সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত স্পোর্টস অ্যান্ড এক্সারসাইজ উপর করা এক গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়, যারা হালকা ব্যায়াম করেন তাদের চাইতে কঠিন ব্যায়াম করা মানুষদের পেটের মেদ বেশি কমে।
ক্যালিফোর্নিয়ার ব্যায়াম প্রশিক্ষক নাটালি জিল বলেন, “পূর্ণোদমে ব্যায়াম করতে হবে। আপনার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ক্যালরি পোড়ানো। আর কঠিন ব্যায়াম করেই তা সম্ভব।”
কঠিন ব্যায়াম করতে কষ্ট হলেও এভাবে ভাবুন— কম সময়ে বেশি ক্যালরি পোড়ানো যাচ্ছে।
ভুল ব্যায়াম করা
ঠিকমতো ব্যায়াম না করলে যেমন কাজ হয় না তেমনি ভুল ব্যায়ামও কোনো উপকারে আসে না।
জিল বলেন, “শুধু পেটের ব্যায়াম করলেই হবে না, সঙ্গে পিঠ, নিতম্বসহ শরীরের সব অঙ্গের ব্যায়াম করতে হবে। যত বেশি মাংশপেশির ব্যবহার হবে ততবেশি ক্যালরি পুড়বে।”
মানসিক চাপ
পারিবারিক জীবন, অফিসের কাজ, বিল জমা দেওয়ার জন্য টাকা জোগাড়— ইত্যাদি কারণে মানসিক চাপে থাকে মানুষ। আর এ থেকে শরীরের বাড়তি ওজন কমানো কঠিন হয়ে যায়। বিশেষ করে শরীরের মধ্যবর্তী অঞ্চলের মেদ।
মানসিক চাপে থাকলে উচ্চমাত্রার চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার আকর্ষণ বাড়ে। তবে শুধু এই কারণেই নয়, স্ট্রেস হরমোন করটিজোল শরীরে লেগে থাকা চর্বি প্রসারিত করতে সাহায্য করে। আর শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় অন্ত্রে বেশি চর্বি থাকে।
কম ঘুম
পর্যাপ্ত ঘুম না হলেও ওজন বাড়তে পারে।
১৬ বছর ধরে প্রায় ৭০ হাজার নারীর উপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে যারা সাত ঘণ্টা ঘুমায় তাদের চাইতে যারা পাঁচ ঘণ্টা বা এর চেয়ে কম ঘুমাচ্ছেন, এদের মধ্যে শতকরা ৩০ভাগেরই ওজন বেড়েছে।
ন্যাশনাল ইনিস্টিটিউট অফ হেল্থ’য়ের পরামর্শ হচ্ছে, প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের রাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।
আপেলাকৃতি
যদি নিতম্ব এবং উরুর চাইতে পেটের মাপ গোলাকার হয় তবে আপনার আকার আপেলের মতো।
ডা. কাশ্যাপ বলেন, “এই বংশগত প্রবণতার কারণে হয়ত পেটের মেদ কমানো কষ্ঠকর। তবে অসম্ভব কিছু নয়।”
আপনি হয়ত অসুস্থ
যদি টেসটোসটেরনের মাত্রা বেশি থাকে তবে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রম (পিসিওএস) হতে পারে। এর কারণে পেটের মেদ কমানো কষ্ঠকর হয়।
ডা. কাশ্যাপ বলেন, “দেহের আকার আপেলের মতো হওয়ার পাশাপাশি যদি অতিরিক্ত ওজন থাকে তবে ডাক্তার দেখানো উচিত।”
সেই সঙ্গে হয়ত আপনি প্রিডায়াবেটিক বা ডায়াবেটিক রুগিও হতে পারেন।
তবে আপনার কি পেটের মেদ কমানোর ইচ্ছা আছে?
ডা. কাশ্যাপ বলেন, “স্বল্প ক্যালরি যুক্ত খাবারের সঙ্গে প্রচুর আঁশযুক্ত খাবার, স্বল্প কার্বোহাইড্রেইট ও চিনি সঙ্গে কার্ডিওভাস্কুলার এবং ওজন কমানোর ব্যায়ামের সমন্বয়ের মাধ্যমে পেটের মেদ কমানো সম্ভব।”